শুক্রবার, ২০ জুন, ২০১৪

পাইকগাছার বাঁকা বাজারে অবাধে গড়ে উঠেছে ক্লিনিক; করছে না নিয়মনীতির তোয়াক্কা

চিকিৎসার নামে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা
নিউজ অফ পাইকগাছা ॥
তিন উপজেলার সীমান্তবর্তী খুলনা পাইকগাছার বাঁকা বাজারে অবাধে গড়ে উঠেছে কয়েকটি ক্লিনিক। ক্লিনিকগুলোর মধ্যে কোনটার নেই লাইসেন্স আবার কোনটার লাইসন্সে থাকলেও নেই সার্বক্ষনিক ডাক্তার ও নার্স ব্যবস্থা। ফলে চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে ক্লিনিক মালিকরা হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করলেও এখনও একাধিক প্রতিষ্ঠান বহাল তবিয়াতে চালিয়ে যাচ্ছেন ক্লিনিক ব্যবসা। অবাধে গড়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।
জানাগেছে, সাতক্ষীরা জেলার তালা ও আশাশুনি উপজেলার সীমান্তে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রাড়–লী ইউনিয়নের জনবহুল বাঁকা বাজারে দীর্ঘদিন ধরে অবাধে গড়ে উঠেছে কয়েকটি ক্লিনিক। শ্রীকন্ঠপুর বাঁকা সড়কের পূর্ব পাশে দ্বিতল ভবনে গড়ে উঠেছে পারভেজ ক্লিনিক। একই সড়কের পশ্চিম পাশে রয়েছে জাহানারা ক্লিনিক। জাহানারা নামে একজন মহিলা ক্লিনিকটি পরিচালনা করে আসছেন। কোন রেজিষ্ট্রেশন ছাড়াই দীর্ঘদিন যাবৎ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ক্লিনিকটি পরিচালিত হচ্ছে বলে এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন। ক্লিনিকে ভর্তিকৃত রোগী রামনগর এলাকার মঞ্জুয়ারা বেগম জানান পিত্ত থলিতে ক্ষত হওয়ার কারনে ৬ হাজার টাকার চুক্তিতে তিনি ভর্তি হয়েছেন। অপারেশনের পর থেকে ৩/৪ দিনের মধ্যে কোন ডাক্তারের চেহারা দেখতে পাননি বলে ভূক্তভোগী এ রোগী অভিযোগ করেন। এলাকাবাসীদের অভিযোগ একটি ক্লিনিক পরিচালনা করতে যা যা প্রয়োজন তার কোন কিছুই নেই জাহানারা ক্লিনিকে। কিèনিকের জাহানারা বেগম নিজেই ডাক্তার, নিজেই সেবিকা, নিজেই তত্ত্বাবধায়ক। তিনি এক সময় কোন এক ডাক্তারের আয়া হিসাবে কাজ করতে গিয়ে এখন তিনি নিজেই ক্লিনিকের মালিক। ক্লিনিকের নেই কোন সাইনবোর্ড, অপারেশন থিয়েটার, নেই কোন যন্ত্রাংশ। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ক্লিনিকটি পরিচালিত হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এ ব্যাপারে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগাতেই ক্লিনিকটি পরিচালনা করা হচ্ছে এবং এক বছরের মধ্যে ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জাহানারা বেগম জানান। অপরদিকে কাটিপাড়া বাঁকা সড়কের পাশেই গড়ে উঠেছে বাঁকা সার্জিক্যাল ক্লিনিক ও ডায়গনষ্টিক সেন্টার। ক্লিনিকটি দেখতে অনেকটাই চাকচিক্য হলেও নিয়মিত ডাক্তার ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডিপ্লোমা নার্স থাকে না বলে ভূক্তভোগীদের অভিযোগ। গত কয়েকদিন আগে ক্লিনিকে ডেলিভারী করার সময় আঘাত লাগার ফলে আশংকাজনক অবস্থায় একটি শিশু সাতক্ষীরা নেয়ার পর মৃত্যুবরণ করে বলে সরল গ্রামের আবু সাঈদ জানান। অবাধে গড়ে ওঠা এসব ক্লিনিকগুলো চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। বেশকিছুদিন আগে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে পারভেজ ক্লিনিককে জরিমানা করলেও বহাল তবিয়াতে চিকিৎসার নামে একাধিক প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছেন ক্লিনিক ব্যবসা। এ ব্যাপারে দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ কামরুল ইসলাম জানান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন