শুক্রবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

পাইকগাছায় দিশেহারা জামায়াত নেতাকর্মীরা; নিজেদের রক্ষা করতে আ’লীগের ছায়াতলে অবস্থান নিচ্ছেন অনেকেই

বিশেষ প্রতিনিধি ॥খুলনার পাইকগাছায় সরকার বিরোধী দীর্ঘ আন্দোলনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে জামায়াতের নেতাকর্মীরা। একাধিকবার জেল খেটে অনেকেই হয়ে গেছেন নিস্ক্রিয়, দলের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজনৈতিক কর্মসূচী থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছেন অনেকেই, অনেকেই আছেন আত্মগোপনে, অনেকেই আবার গ্রেফতার এড়াতে সরকার দলীয় (আ’লীগের) সাইন বোর্ড লাগিয়ে নিজেদেরকে রক্ষা করার চেষ্ঠা করছেন। জামায়াাতের এ ধরনের অনেক দায়িত্বশীল পলাতক নেতা বর্তমানে আ’লীগের ছায়াতলে কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে বলে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি খুলনা জেলা আ’লীগের সম্মেলনে পাইকগাছা উপজেলা আ’লীগের একাংশের নেতাদের সাথে আ’লীগের ফেস্টুন লাগানো জামায়াতের দায়িত্বশীল নেতাকে দেখে হতবাক হয়েছেন সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দলীয় উর্দ্ধতন নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেও তারা।
 
সুত্রমতে-২০০৮ সালের নির্বাচন পরবর্তী গত ৬ বছরের সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রধান শরীক জামায়াত মুখ্য ভূমিকা পালন করে এসেছে। আন্দোলনের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে জামায়াতের হাজারো নেতাকর্মী জড়িয়ে পড়েন একাধিক মামলায়। দলের অনেক নেতাকর্মী দীর্ঘদিন জেলে থাকা সময়ে পরিবার পরিজনকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়। অনেকেই পলাতক থাকাায় পরিবার থেকে হয়ে পড়েন বিচ্ছিন্ন। এসব নানাবিধ কারনে সরকার বিরোধী দীর্ঘ আন্দোলনে বর্তমানে অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পড়েছে জামায়াতের নেতাকর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা জামায়াতের দায়িত্বশীল এক নেতা জানান এ পর্যন্ত আমাকে কয়েকবার জেলে যেতে হয়েছে। জেলা থাকাকালীন সময়ে দলের পক্ষ থেকে পরিবার পরিজনের কেউ খবর নেয়নি। তাই অনেকটাই ক্ষোভে দুঃখে দলীয় কর্মকান্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন বলে দায়িত্বশীল এ নেতা জানান। বিগত ৫ জানুয়ারীকে কেন্দ্র করে থানাপুলিশ নাশকতা রোধে নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে এমন তালিকা প্রনয়ন করার মাধ্যমে কঠোর অবস্থান নেয়ার ফলে গ্রেফতার এড়াতে দলের অধিকাংশ দায়িত্বশীল নেতাই রয়েছে পলাতক। ফলে অনেকটাই নেতাকর্মী ছাড়াই চলছে জামায়াতের কার্যক্রম। পলাতকথাকা তালিকাভূক্ত অনেক নেতা আ’লীগের সাইনবোর্ড নিজেকে রক্ষা করার চেষ্ঠা করছেন। গত বৃহস্পতিবার জেলা আ’লীগের সম্মেলনে পাইকগাছা পৌর জামায়াতের ৩নং ওয়ার্ডের সভাপতি মোঃ আসাদুল ইসলামকে আ’লীগের ফেস্টুন লাগিয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশীদুজ্জামান ও আ’লীগ নেতা শেখ কামরুল হাসান টিপুর সাথে “উপজেলা যুবলীগের ফেসবুকের আইডিতে” ছবি দেখে হতবাক হয়েছেন আ’লীেেগর অধিকাংশ নেতাকর্মীরা। অনেকেই মনে করছেন নিজেদের রক্ষা এবং নাশকতার দায়ভার আ’লীগের উপর চাপিয়ে দেয়ার লক্ষ্যেই কৌশলগতভাবে জামায়াতের এসব নেতারা আ’লীগের অভ্যন্তরে অবস্থান নিচ্ছে। এ ব্যাপারে পৌর জামায়াতের সভাপতি ডাঃ আসাদুল হক জানান আসাদুল আমাদের পৌর সংগঠনের ৩নং ওয়ার্ড সভাপতি। আ’লীগের কর্মসূচীতে তিনি যদি যোগদান করে থাকে তবে সেটা আমাদের অগচরে করেছে বলে জামায়াতের এ নেতা জানান। নাশকতা সৃষ্টিকারী স্থানীয় তালিকায় আসাদুলের নাম রয়েছে বলে গোয়েন্দা সুত্র নিশ্চিত করেছে। এ প্রসংগে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগ নেতা মোঃ রশীদুজ্জামান জানান জামায়াতের এ ধরনের কোন নেতা আ’লীগের কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করেছে সে ব্যাপারে কোন কিছু জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে তিনি জানান।