
বিশেষ প্রতিনিধি॥
সুত্রমতে-জেলার গুরুত্বপুর্ণ এ উপজেলায় রাজনৈতিকভাবে দীর্ঘদিন শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ। যদিও দলীয় অভ্যন্তরীন কোন্দলের জের ধরে বর্তমানে নাজুক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দলীয় এ কোন্দল দীর্ঘদিনের হলেও ২০১৪ সালে এক যুগেরও অধিক সময় পর দলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে নেতাকর্মীরা। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন বর্তমান এমপি এ্যাড. শেখ মোঃ নূরুল হক, জেলা আ’লীগের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক গাজী রফিকুল ইসলাম, উপজেলা আ’লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক মলঙ্গী ও সাবেক সহ-সভাপতি রতন কুমার ভদ্র। অপরপক্ষে নেতৃত্ব দেন সাবেক এমপি এ্যাড. সোহরাব আলী সানা, উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক গাজী মোহাম্মদ আলী, সদস্য সচিব ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশীদুজ্জামান। বিশেষ করে কমিটিতে বর্তমান এমপি এ্যাড. শেখ মোঃ নূরুল হকের অনুসারীদের চরমভাবে উপেক্ষা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এরই সুত্র ধরে ফুঁসে ওঠে এমপি অনুসারীরা। বিভিন্ন সভা, সমাবেশের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েও কোন প্রতিকার না হওয়ায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে ২০১৪ সালের ২৬ অক্টোবর দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় কয়েকজন নেতাকর্মী। এ ঘটনায় উপজেলা আ’লীগের সদস্য সচিব মোঃ রশিদুজ্জামান বাদী হয়ে এমপি অনুসারী দেড় শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামী করে এবং অপরদিকে উপজেলা আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ আফসার আলী বাদী হয়ে সাবেক এমপি অনুসারী শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামী করে পাল্টাপাল্টি মামলা করেন। এ ঘটনার পর থেকে তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে দলীয় কোন্দল। একের পর এক হতে থাকে মামলা। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ঘায়েল করতে মামলার প্রতিযোগিতায় নামে, যা বর্তমানেও চলমান রয়েছে। এমনকি দলের বাইরের অনেক বিষয়কে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে দল বহিঃভূত ব্যক্তিদেরকে উৎসাহিত করেছে দলের একটা অংশ। গত দেড় বছরে দলীয় অভ্যন্তরীন কোন্দল, আধিপত্য বিস্তারসহ নানা ইস্যুতে শত শত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা হয়েছে। যার আসামী হয়েছেন উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক গাজী মোহাম্মদ আলী, সদস্য সচিব ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশীদুজ্জামান, বর্তমান এমপি পুত্র শেখ মনিরুল ইসলাম, সাবেক এমপি পুত্র মেহেদি হাসান রুমি, পৌর আ’লীগের সদস্যসচিব হেমেশ চন্দ্র মন্ডল, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এসএম শামসুর রহমান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি তৃপ্তি রঞ্জন সেন, উপজেলা কৃষকলীগের সদস্য সচিব প্রভাষক ময়নুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ আবুল কালাম আজাদ, হরিঢালী ইউনিয়ন আ’লীগের আহবায়ক বেনজির আহমেদ বাচ্চু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরদার গোলাম মোস্তফাসহ শত শত নেতাকর্মী। মামলা যেন পিছু ছাড়ছে না ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের। সর্বশেষ গত ১৯ মে উপজেলা আ’লীগের সদস্য সচিব ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশীদুজ্জামানসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় দায়ের করা হয় চাঁদাবাজি মামলা। বর্তমানে মামলার ভারে অনেকটাই নুয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিনের দলীয় এ সংকট নিরসনে প্রয়োজন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের আশু হস্তক্ষেপ।
খুলনার পাইকগাছায় মামলার ভারে নুয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ফলে মামলার পিছে দৌড়াতে গিয়ে ব্যহত হচ্ছে দলীয় কর্মসূচী। দলীয় অভ্যন্তরীন কোন্দল, আধিপত্য বিস্তার ও নানা ইস্যুকে কেন্দ্র করে গত দেড় বছরে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পরস্পর বিরোধী অসংখ্য মামলার ঘটনা ঘটেছে। এসকল মামলায় উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক ও সদস্য সচিব, বর্তমান ও সাবেক এমপি পুত্রসহ প্রায় প্রতিটি সহযোগী সংগঠনের সভাপতিকে আসামী করা হয়েছে। কোন কোন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। অভ্যন্তরীন কোন্দল চরম আকার ধারন করায় ভেঙ্গে পড়েছে দলীয় শৃঙ্খলা। তৃনমূল নেতাকর্মীদের ধারনা দলীয় এ সংকট নিরসন না হলে ভবিষ্যতে রাজনৈতিকভাবে বড় ধরনের খেসারত দিতে হবে ক্ষমতাসীন দলের। অনেকের অভিযোগ জেলা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দলীয় এ কোন্দল নিরসনে উদাসিন রয়েছে। যার ফলে দীর্ঘদিনের এ সংকট নিরসনে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন