শনিবার, ১৪ মে, ২০১৬

পাইকগাছা-কয়রায় চাহিদার তুলনায় ৪০% কমে গেছে বিদ্যুৎ সরবরাহ; ভোগান্তিতে ৩০ হাজার গ্রাহক

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ পাইকগাছা-কয়রায় প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বিদ্যুৎ সংকট। দিনে ও রাতে অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া থেকে শুরু করে স্থবির হয়ে পড়েছে দৈনন্দিন সকল কার্যক্রম। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে সরবরাহ কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় ১০-১৫ ঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় বিদ্যুতের জন্য। ফলে বিদ্যুৎ নিয়ে ভোগান্তিতে রয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৩৬ হাজার গ্রাহক। বিদ্যুতের এ সংকটের জন্য একদিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। অপরদিকে সংকটের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছে। সাধারণ গ্রাহকদের এমন অভিযোগ অস্বীকার করে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে যাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুৎ সংকট পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের আওতায় বর্তমানে পাইকগাছা ও কয়রায় ৩৬ হাজারেরও অধিক গ্রাহক রয়েছে। যার মধ্যে আবাসিক ৩০ হাজার এবং অন্যান্য ৬ হাজার। এ ছাড়াও প্রতিনিয়ত কমবেশী বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যা। গ্রাহক বাড়ার সাথে সাথে বিদ্যুতের চাহিদাও বাড়ছে। বর্তমান সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর ক্রমাগত বিদ্যুতের উন্নয়ন ঘটে। একটা সময় লোর্ড শের্ডিং ছিলোনা বললেই চলে। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুৎ নিয়ে সমস্যার যেন অন্তনেই। বিদ্যুৎ কখন আসে কখন যাই এ নিয়ে সব সময়ই দূঃচিন্তায় থাকতে হয় গ্রাহকদের। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে কয়েক ঘন্টা পর পর বিদ্যুতের দেখা মিললেও ঝড়, বৃষ্টি হলেই উধাও হয়ে যায় বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের জন্য কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। অপেক্ষার এ সময় অনেক ক্ষেত্রে আরো দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হয়। শুক্রবার ঝড়ের কারণে রাত সাড়ে ৯ টায় বিদ্যুৎ চলে যায় এবং পরের দিন শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় বিদ্যুতের দেখা মেলে। ফলে প্রচন্ড এ গরমের মৌসুমে বিদ্যুতের জন্য অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া থেকে শুরু করে ব্যবসা, বাণিজ্য সহ স্থবির হয়ে পড়েছে দৈনন্দিন সকল কার্যক্রম। এজন্য বিদ্যুৎ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে চাঁপা ক্ষোভ। বিদ্যুতের এ সংকটের জন্য অনেকেই প্রকাশ্যেই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। অনেকেই বলছেন বর্তমান সরকারের সকল অর্জন ম্লান করে দিচ্ছে বিদ্যুৎ সংকট। এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বদরুল আনাম জানান, গত কয়েক বছরে বিদ্যুতের যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রাহকের সংখ্যাও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই চাহিদা বেড়েছে বিদ্যুতের। বর্তমানে জোনাল অফিসের আওতায় প্রায় ৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা রয়েছে। যার বিপরীতে চাহিদার তুলনায় সাম্প্রতিক সময়ে সরবরাহ কমে গেছে ৪০%। যার কারণে স্বাভাবিক বিদ্যুৎ সরবরাহে কিছুটা বিঘিœত হচ্ছে। তবে এ সমস্যা দীর্ঘ স্থায়ী নয় উল্লেখ করে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে বলে মন্তব্য করেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির স্থানীয় উর্দ্ধতন এ কর্মকর্তা। বিদ্যুৎ সমস্যা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন এবং সমস্যার আশুসমাধান করবেন এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন