শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৩

পাইকগাছায় প্রবাহমান কপোতাক্ষ নদ অবৈধ বন্দোবস্ত দেয়ার অভিযোগ; জেলা প্রশাসকের ভূমি অফিস পরিদর্শন

খুলনার পাইকগাছায় বহুল আলোচিত কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত সংক্রান্ত ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগের প্রেেিত উপজেলা ভূমি অফিসের কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মেছবাহ উদ্দীন। প্রবাহমান কপোতা নদ ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে খাস জমি হিসেবে বন্দোবস্ত প্রদানসহ ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠলে জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দিপংকর বিশ্বাস ও জেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যতম সদস্য শ্যামল সিংহ রায় শনিবার সকালে এ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে সংশ্লিষ্ট তহশীলদাররা তোপের মুখে পড়েন বলে জানা গেছে, এদিকে ভূমি দালাল ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সরকারের শেষ মেয়াদে স্থানীয় উপজেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ও প্রশাসনের কতিপয় কর্মচারীদের সহায়তায় ২৬১ কোটি টাকা খনন কাজে বরাদ্দকৃত ঐহিত্যবাহী প্রবাহমান কপোতা নদের উপরে অর্ধশত ব্যক্তির নামে বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে দালালদের সহায়তায় লাখ লাখ টাকা অর্থ বাণিজ্যের বিনিময়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত ভূমি বন্দোবস্ত কেস নথি জেলা কমিটিতে প্রেরণ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রাজনৈতিক কর্মী, ধর্ণাঢ্য ব্যক্তিসহ একই পরিবারের একাধিক সদস্যদের নাম রয়েছে এমন অভিযোগে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ইতোমধ্যে এসব নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা কৃষি ও খাস জমি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায়ও ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয় বলে জানা যায়। খাস জমি সংক্রান্ত এসব নানাবিধ অভিযোগের প্রেেিত খুলনা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপ শনিবার উপজেলা ভূমি অফিসের কার্যক্রম পরিদর্শন করে ভূমি সংক্রান্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখেন এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে এ সংক্রান্ত বিষয়ে মতবিনিময় করেন। এ সময় এলাকার অনেক ভূক্তভোগীরা উপজেলা পরিষদ এলাকায় ভিড় জমান। এদের মধ্যে উপস্থিত চাঁদখালী ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামের সামছুর মোড়লের পুত্র ইউনুছ মোড়ল জানান, তাদের একই এলাকার রুস্তম ঢালী, রহমত মোল্লা, জামাত ঢালী, আবুল কালাম আজাদসহ ৭৯-৮০ সালের ভোগ দখলকৃত ১৮ ব্যক্তির নামে বন্দোবস্ত সম্পত্তি এলাকার ইউনুছ মোল্লা নামে এক ভূমি দালালের সহযোগিতায় স্থানীয় লস্কর তহশীলদারের মাধ্যমে নতুন বন্দোবস্ত কেস নথি সৃজন করে জেলা কমিটিতে প্রেরণ করেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা কৃষি খাস ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও কৃষকনেতা শ্যামল সিংহ রায় জানান, কপোতা নদের উপরে বন্দোবস্ত প্রদানের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। শ্রেণী পরিবর্তন, জলমহল অবমুক্ত না করে এটা করা হয়েছে। যারা এ অপকর্মের সাথে জড়িত ইতিমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে জেলা কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। কপোতাকে বাঁচানোর স্বার্থে এ সব বন্দোবস্ত কেস বাতিল করা জরুরী বলে জানিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশীদুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দিপংকর বিশ্বাস জানান, পাইকগাছা ভূমি বন্দোবস্ত প্রক্রিয়ার বিষয়টি দীর্ঘদিনের একটি জটিল বিষয়। অভিযোগ ওঠায় ইতোমধ্যে অনেক নতুন বন্দোবস্ত কেস নথি উপজেলায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। যারা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোমিনুর রশীদ।

সম্পাদনায়
এডিটর
নিউজ অফ পাইকগাছা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন