রবিবার, ৯ জুলাই, ২০১৭

পাইকগাছায় কমিটি গঠন না হওয়ায় তৃনমূলে বাড়ছে হতাশা ও ক্ষোভ; আগামী সংসদ নির্বাচনে এর প্রভাব পড়ার আশংকা

বিশেষ প্রতিনিধি।।॥
আওয়ামীলীগের তৃনমূলে বাড়ছে কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা ও ক্ষোভ। প্রভাবশালী নেতাদের অবমূল্যায়নের কারনে নিষ্কিয় হয়ে পড়ছে মাঠ পর্যায়ের ত্যাগী ও দূঃসময়ে জীবনবাজি রাখা নেতা-কর্মীরা। নীতি নির্ধারকদের উচিত অবিলম্বে তৃনমূলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করে তাদেরকে আবার ও সক্রিয় করা। কারন আগামী নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্ধীতাপূর্ন। যিনি নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন জিততে হলে উনাকে তো তখন তৃনমূলের বঞ্চিত এই সব নেতা-কর্মীদের কাছে যেতে হবে। কারন মুষ্টিমেয় কিছু সুবিধাভোগী দিয়ে তো আর আগামী নির্বাচনে বৈতরনী পার হওয়া যাবে না। আর তখন সুবিধাভোগীরা সুবিধাভোগ করবে কোন কাজে আসবেনা। কথায় আছে না ভোগে সুখ না ত্যাগে সুখ। আর সুবিধাবাজিদের জন্য হচ্ছে ভোগে সুখ ত্যাগে না। ছয় মাসের আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে আরো দুই বছর আগে। আর মূল কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে তারও ৮-৯ বছর আগে। কিন্তু খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার বিরোধপূর্ণ আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করতে পারেনি কেউ। খুলনার অন্য ৮ উপজেলায় কমিটি থাকলেও পাইকগাছার গুরুত্বপূর্ণ এ উপজেলায় কমিটি না থাকায় দলীয় কার্যক্রম ভেঙ্গে পড়েছে। বর্তমান সংসদ সদস্য এ্যাড” শেখ মোঃ নূরুল হক দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারপরও তৃনমূলে ক্ষোভ ও হতাশা বেড়েই চলেছে। গত ৮-১০ বছরে কমিটি না হওয়ায় নেতৃত্ব প্রত্যাশী নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ উপজেলায় এটির প্রভাব পড়বে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। আর তৃনমূল নেতাকর্মীরা এর জন্য দায়ী করছেন জেলা কমিটির নিতি নির্ধারকদের। আজ আওয়ামীলীগের খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলন। এ সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করার কথা থাকলেও চাপা ক্ষোভ ও হতাশায় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিদ্যমান। তারপরও সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীরা আশার আলো দেখছে। তৃনমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের একটাই দাবী এই গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় পূর্নাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করে দলীয় কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করা হবে এটাই প্রত্যাশা করছেন এ উপজেলার তৃনমূল নেতাকর্মীরা।
    দলীয় সূত্রানুযায়ী, ২০০৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন হয়। শেখ বেলাল উদ্দিন বিলুকে সভাপতি ও এসএম মাহাবুবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে তখন কমিটি গঠিত হয়। পদে থাকা অবস্থাতেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুবরণ করেন। এরপর রশিদুজ্জামান মোড়লকে সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ও আব্দুর রাজ্জাক মলঙ্গীকে সাধারণ সম্পাদকের (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এই কমিটি নতুন কমিটি করতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১৫ সালে গাজী মোহাম্মদ আলীকে আহ্বায়ক ও রশিদুজ্জামান মোড়লকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। গঠন হওয়া এই আহবায়ক কমিটিও তৃনমূল ত্যাগী নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করছে বলে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা দাবী করেন। তবে সেই কমিটি গঠনের সময় দুই গ্রপের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া আর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর আর কমিটি গঠন হয়নি। ফলে উপজেলায় নেতৃত্ব প্রত্যাশী নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। দলীয় কর্মকান্ডে তাদের সম্পৃক্ততা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। অনেকেই আক্ষেপ প্রকাশ করে বলছেন, দল ক্ষমতায় আছে বলে এখনও মিছিল সমাবেশে লোক পাওয়া যাচ্ছে। পাইকগাছা উপজেলার নেতৃবৃন্দ বলেন, অবিলম্বে কমিটি গঠন করা না হলে আগামীতে অনেকেই দলীয় কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হবে না।
    দলীয় সূত্রানুযায়ী, পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই পদ ছাড়াও অন্যান্য পদ গুলোর জন্য শতাধিক নেতাকর্মী প্রস্তুত হয়ে আছেন। যারা পদের জন্য চেষ্টা করছেন তারাও বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্যের অনুসারী। ফলে কাকে বাদ দিয়ে কাকে কমিটিতে রাখা হবে এই নিয়েই জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা দিধাদ্বর্দ্বের মধ্যে রয়েছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতাকর্মী এ প্রতিবেদককে জানান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন