রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬

পাইকগাছায় শাপলা ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ অমান্য করে বহাল তবিয়তে চলছে কার্যক্রম

বিশেষ প্রতিনিধি ॥
খুলনার পাইকগাছায় শাপলা ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ও লাইসেন্স বাতিলের জন্য কারণ দর্শানো নির্দেশ দিলেও বহাল তবিয়তে চলছে তার কার্যক্রম। সার্বক্ষণিক ডাক্তার না থাকা, এ্যানাস্থেশিয়া না দিয়ে এ্যাসিসট্যান্ট ডাক্তার দ্বারা অপারেশন করায় প্রায়ই রোগীর মৃত্যু হওয়ায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সিভিল সার্জন, খুলনা এ নির্দেশনা দেন।
তদন্ত রিপোর্টে দেখা যায়, খুলনা জেলার পাইকগাছা পৌরসভার প্রধান সড়কের পাশে শাপলা ক্লিনিক এণ্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে হাসপাতালে সার্বক্ষণিক কোন ডাক্তার ও প্রশিক্ষিত কোন নার্স নেই। ৭০ বছরের উর্ধে বয়স্ক ডাঃ বিপিন বিহারীর মাঝে মাঝে উপস্থিতিতে এ্যাসিসট্যান্ট দ্বারা অপারেশন করা হয়। যে কারণে বছরে প্রায়ই ২/৪ টি রোগীর মৃত্যু ঘটে বলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে প্রকাশ। গত ১৩ আগস্ট পাইকগাছার গজালিয়া গ্রামের রেশমা খাতুন (২০) অপারেশন শেষে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যুবরণ করেন। এ সংক্রান্ত অভিযোগ হলে স্মারক সি,এস,কে/শা-১, ২০১৬/১৮৯৫ স্মারকে ৩ সদস্যের তদন্ত টিম কমিটির প্রধান থাকেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ ময়নউদ্দীন মোল্লা। তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ক্লিনিকে সার্বক্ষণিক কোন ডাক্তার ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স নাই। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা অপারেশন না করে ভাড়াটিয়া এ্যাসিসট্যান্ট ডাক্তার দ্বারা অপারেশন করা হয়। কোন প্যাথলোজি বিশেষজ্ঞ ও রক্ত সঞ্চালনের কোন ব্যবস্থা নেই। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নেই। সব সময় আয়া, ওয়ার্ডবয় ও সুইপার থাকে না। ১০ শয্যার অনুমোদন থাকলেও প্রায় সময় ২৭-৩০ জন রোগী ভর্তি থাকে। ল্যাবরেটরির মধ্যে রক্ষিত ফ্রিজে মাছ, মাংস, তরিতরকারি রাখা হয়। ক্লিনিকটি টিনসেড ও ভাড়াটে জায়গায় অবস্থিত। তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের পর সিভিল সার্জন, খুলনা ডাঃ এ,এস,এম আব্দুর রাজ্জাক ক্লিনিকটি বন্ধ ও ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ৮৭৩৪ লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না তাদের কারণ দর্শাতে বলেন। যার স্মার নং- সিএসকেশা-১/২০১৬/২৯৯৭। একই সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ ও সদয় অবগতির জন্য মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা (দৃষ্টি আকর্ষণ- পরিচালক, হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহ), পরিচালক (স্বাস্থ্য), খুলনা বিভাগ, খুলনা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পাইকগাছা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও থানা অফিসার ইনচার্জ, পাইকগাছাথানাকে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ক্লিনিক পরিচালক তাপস কুমার মিস্ত্রী ৩/৪ দিন আগে সিভিল সার্জন, খুলনার দেয়া নির্দেশনার কাগজ পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন।  উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা অফিসার ইনচার্জের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ডেপুটি সিভিল সার্জন ক্লিনিকের যাবতীয় ত্র“টিগুলো বলেন, এ ধরণের প্রতিষ্ঠান থাকলে রোগীর মৃত্যু সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন