SUCCESS STORY:
Writer:
Md. Ashraful Hoque
Technical Specialist (Sustainable Aquaculture)
USAID-Aquaculture for Income and Nutrition (AIN) Project
WorldFish-Bangladesh
বাংলাদেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চল চিংড়ি চাষের জন্য প্রসিদ্ধ। কিন্তু চাষ পদ্ধতি সনাতন হওয়ায় চিংড়ি চাষিদের উৎপাদন কোন, লাভের পরিমাণ সীমিত এবং বেশিরভাগ সময়ই লোকসান গুণতে হয়। কুমুদ রঞ্জন সানা পিতা মৃতঃ বিজয় সানা খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার লস্কর ইউনিয়নের লস্কর গ্রামের বাসিন্দা। জীবিকা নির্বাহের জন্য ২০০৫ সাল থেকে তিনি তার ৯৯ শতক লিজ নেওয়া জমিতে চিংড়ি চাষ শুরু করেন। কিন্তু চিংড়ি চাষ সম্পর্কে ভালো জ্ঞান না থাকাই গতানুগতিক সনাতন পদ্ধতিতে চাষ করার কারনে কখনই ভালো উৎপাদন পায়নি ফলে তার অর্থনৈতিক অবস্থার তেমন পরিবরতন হয়নি বরং সংসারের খরচ জোগাতে তার হিমসিম খেতে হয়েছে বছরের পর বছর।
কুমুদ সানা অবশেষে, ২০১৩ সালের প্রথম দিকে ইউএসএআইডি এর অর্থায়নে ওয়ার্ল্ডফিস বাংলাদেশ কর্তৃক বাস্তবায়নকৃত অ্যাকুয়াকালচার ফর ইনকাম অ্যান্ড নিউট্রিশন (এআইএন) প্রকল্পের চাষি দলের অন্তর্ভুক্ত এবং ভালো চাষ ব্যবস্থাপনা ( বিএমপি) সম্পর্কে জানতে পারে যা সাধারণ চাষিদের পক্ষে গ্রহণযোগ্য। এখন থেকে তার কাছে পরিস্কার যে অপরিকল্পিত সনাতন চাষ ব্যবস্থাপনা অর্থাৎ অপরিকল্পিতভাবে ঘের প্রস্তুতি, সঠিক নিয়মে চুন, সার না দেওয়া, মজুদ ঘনত্ব ঠিক না রাখা, মাটি ও পানির সঠিক গুনাগুন বজায় না রাখা, রোগমুক্ত সবল পোনা মজুদ না করা ও অন্যান্য পরিবেশ ভালো না রাখার কারনেই রোগবালাই বেশি হয় এবং আশানুরুপ ফল পান না।
তিনি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ঘের পরিচালনা করে বিগত বছরগুলোর তুলনায় অধিক উৎপাদন ও লাভ পেতে শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতাই তিনি তার ৯৯ শতক ঘের থেকে গত বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালে ১২০ কেজি বাগদা ও ২৮০ কেজি সাদা মাছ বিক্রি করেন যার বাজার মূল্য ৬০০০০ এবং ১৬৮০০ টাকা এবং খরচ বাদে নীট লাভ করেন ২৪৮০০ টাকা। তিনি ২০১৬ সালের প্রথম থেকেই ভালো চাষ ব্যবস্থাপনা ( বিএমপি) পদ্ধতি অনুসরণ করে সঠিক নিয়মে ঘের প্রস্তুত, চুন, সার, খাদ্য প্রয়োগ, সঠিক ঘনত্বে রোগমুক্ত এসপিএফ পোনা মজুদ সহ পানির গুনাগুন বজায় রেখে ঘের পরিচালিনা করে তিনি তার ৯৯ শতক লিজের ঘের থেকে ৩৩৯ কেজি বাগদা চিংড়ি, ৪০০ কেজি সাদা মাছ করেন যার বাজার মূল্য যথাক্রমে ১৮৬৪৫০ টাকা, ২৪০০০ টাকা। তিনি তার ঘেরে চুন, সার, খাদ্য, পোনা, মুজুরি ও লিজ বাবদ মোট ৭৬৪৬০ খরচ করেন এবং নীট লাভ করেন ১৩৩৯৯০ টাকা। তিনি তার এই ভালো উৎপাদন পাওয়ায় খুবই আনান্দিত এবং তার আত্মবিশ্বাসও বেড়ে গিয়েছে অনেক। এখন তিনি তার ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসার খুব ভালো চালাতে পারছেন।
কুমুদ সানা বলেন তার এই অধিক উৎপাদনের পিছনে এস পি এফ বাগদা পোনার ভূমিকা খুবিই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন এস পি এফ বাগদা পোনার সাধারণ চিংড়ি পোনার চেয়ে দূরত্ব বর্ধনশীল ও রোগ প্রতিরোধে সক্ষম ফলে ঝুকিও কম। তবে চাষিরা সময় মত চাহিদা অনুপাতে পোনা না পাওয়ায় খতিগ্রস্থ হচ্ছে কারণ চাষিদেরকে এস পি এফ পোনা না পাওয়ায় অন্যান্য সাধারণ পোনার সাথে চাষ করতে হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন