বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৭

পাইকগাছায় জায়গা-জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ চরমে; বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে জমি বুঝে না দেওয়ার অভিযোগ

পাইকগাছা প্রতিনিধি ॥
পাইকগাছায় জায়গা-জমি নিয়ে দুই সহোদর ভাইয়ের মধ্যে চরম বিরোধ দেখা দিয়েছে। ছোট ভাইয়ের অংশ বুঝে না দিয়ে বড় ভাই ভোগ দখলে রেখে উল্টো ছোট ভাইকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ছোট ভাই বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
প্রাপ্ত অভিযোগ ও সরেজমিন সূত্রে জানাযায়, উপজেলার হাউলী প্রতাপকাটী গ্রামের মৃত গাজী বেলায়েত হোসেনের দুই ছেলে আছির উদ্দীন ও জিএম আজিরুদ্দিনের মধ্যে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। প্রাপ্ত সূত্রমতে, দুই ভাইয়ের প্রতাপকাটী মৌজায় আরএস ১২২, ১২৩ খতিয়ানে ১৯৩ ও  ১৯৪ দাগে ৪০ শতক এবং ১২৪ খতিয়ানের ১৮৪ দাগে ১৮ শতক ও হাউলী মৌজায় ২৪৪, ২৪৫, ২৪৬, ২৪৭, ৩৫৯ ও ৩৬২ খতিয়ানে ৪৮৩, ৪৮৪, ৪৮৫, ৪৮৬, ৪৯৩, ৪৯৫, ৪৯৭, ৪৯৮ ও ৪৯৯ দাগে মোট ৮১ শতক জমি রয়েছে। যার মধ্যে ছোট ভাই আজিরুদ্দীন প্রতাপকাটী মৌজায় ৪০ শতক জমির উপর এবং বড় ভাই আছির উদ্দীন হাউলী মৌজায় পরিবার পরিজন নিয়ে দীর্ঘদিন পৃথক বসবাস করে আসছেন। উক্ত সম্পত্তির মধ্যে বড় ভাই আছির উদ্দীনের প্রতাপকাটী মৌজায় প্রাপ্য ১৩ শতক ও হাউলী মৌজায় ৩৫ শতক। অনুরূপভাবে ছোট ভাই আজিরুদ্দীনের বোনের খরিদকৃত সহ পৈত্রিক প্রাপ্য প্রতাপকাটী মৌজায় ২৭ ও হাউলী মৌজায় ৪১ শতক। পথিমধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে দুই ভাই একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ ও পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে। বিভিন্ন দপ্তরের আনিত অভিযোগের শুনানী কালে ছোট ভাই আছির উদ্দীন কাউকে না জানিয়ে আজিরুদ্দীনের ভোগ দখলে থাকা বসতবাড়ী হতে তার প্রাপ্য ১৩ শতক জমি অন্যের নিকট বিক্রি করে দেয়। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের ভিত্তিতে কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়াদ্দার ও দুই মেম্বর ইউনুছ আলী মোড়ল ও এসএম মোস্তাফিজুর রহমান বড় ভাই আছির উদ্দীন দূস্কৃতিকারী ও আইন অমান্যকারী উল্লেখ করে ছোট ভাই আজিরুদ্দীনের অনুকূলে প্রতিবেদন দিয়েছে। এদিকে আইন ও শালীস উপেক্ষা করে বড় ভাই আছির উদ্দীন হাউলী মৌজায় আজিরুদ্দীনের প্রাপ্য জমি বুঝে না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা করে আসছে। এ ব্যাপারে আজিরুদ্দীন বাদী হয়ে গত ১৩ জুলাই বড় ভাই আছির উদ্দীনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। বিষয়টি নিষ্পত্তি করার লক্ষে থানা থেকে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ মন্ডল ও কাউন্সিলর শেখ মাহাবুবর রহমান রনজুর উপর দায়িত্ব অর্পন করা হয়েছে। তবে তারা এখনো বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে পারেন নি বলে সরেজমিন গেলে জানাযায়। আজিরুদ্দীন বলেন, আমি বড় ভাইকে ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু সে পরের কথা মতন চলে। আমি তাকে আমার বসতবাড়ীর ১৩ শতক জমির পরিবর্তে  হাউলী মৌজায় ৩৩ শতক জমি ও নগদ ৬০ হাজার টাকা দিতে চেয়ে ছিলাম। কিন্তু পরের কথা শুনে সে আমার প্রস্তাবে রাজি না হয়ে উল্টো আমার বসতবাড়ীর জমি অন্যের নিকট বিক্রি করে দিয়েছে। এখন হাউলী মৌজায় আমার প্রাপ্ত সম্পত্তি বুঝে না দিয়ে সে তালবাহানা করে আসছে। সরেজমিন গেলে এমন প্রস্তাবের কথা স্বীকার করে বড় ভাই আছির উদ্দীন জানান, প্রস্তাবটি আমার জন্য ভাল ছিল। তবে নানা কারণে তা আমি মেনে নেয়নি। আর হাউলী মৌজায় ছোট ভাইয়ের যে সম্পত্তি রয়েছে তা সামনের অংশে পুকুর থাকায় সমাধান হচ্ছে না। তবে থানার দায়িত্ব প্রাপ্ত দুই প্রতিনিধি উভয়ের খরচে পুকুরের মধ্যে যাতায়াতের রাস্তা তৈরী করার কথা বলেছে। আর এটা মেনে নিলে দুই ভাইয়ের মধ্যে কোন সমস্যা থাকবে না বলে তিনি জানান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন