বিশেষ প্রতিনিধি ॥
পাইকগাছায় আধানিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষে রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন হয়েছে। চলতি বছর সদ্য প্রয়াত আলহাজ্ব ফসিয়ার রহমানের সাফওয়ান এ্যাকোয়া কালচার প্রকল্পে হেক্টর প্রতি বাগদা চিংড়ির উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ৭শ কেজি। উৎপাদিত প্রতিটি চিংড়ির দৈহিক ওজন হয়েছে সর্বনিম্ন ১২০ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ১৬০ গ্রাম পর্যন্ত। কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকা। যা সাধারণ চিংড়ির চেয়ে কেজি প্রতি ৫ থেকে ৭শ টাকা বেশী। চিংড়ি উৎপাদনের অতিতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করায় সাফওয়ান প্রকল্পের উৎপাদন দেখে আধানিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সনাতন পদ্ধতির চিংড়ি চাষীরা। সম্প্রতি প্রকল্পটি পরিদর্শন করে উপকূলীয় এলাকায় আধানিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষের অপার সম্ভবনা মনে করছেন মৎস্য বিভাগের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, উপকূলীয় পাইকগাছায় ৮০’র দশকে শুরু হয় লবণ পানির চিংড়ি চাষ। শুরুতেই চিংড়ি চাষ অধিক লাভজনক হলেও ৯০’দশকের পরবর্তী সময় থেকে চিংড়িতে ভাইরাস সহ বিভিন্ন রোগ বালাই দেখা দেয়ায় হুমকির মুখে পড়ে সম্ভবনাময় চিংড়ি শিল্প। বর্তমানে উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ হচ্ছে। ছোট-বড় মিলে চিংড়ি ঘেরের সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৪ সহস্রাধিক। কিন্তু অধিকাংশ ঘের মালিকরা সনাতন পদ্ধতিতে চাষ করায় বছরের পর বছর ধরে লাভের স্থলে লোকসান গুনতে হয় সংশ্লিষ্ট চাষীদের। চিংড়ি চাষের এ দূরাবস্থার মধ্যে চাষ পদ্ধতি পরিবর্তন করে আধানিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষে এগিয়ে আসেন সদ্য প্রয়াত জাতীয় স্বর্ণপদক প্রাপ্ত চিংড়ি চাষী আলহাজ্ব ফসিয়ার রহমান। তিনি ২০১৫ সালে উপজেলার হাড়িয়া মৌজায় ৪শ বিঘা জমির উপর সাফওয়ান এ্যাকোয়া কালচার নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেন। প্রথম বছর ১৬টি পুকুরে চিংড়ি চাষ করে অধিক লাভজনক হওয়ায় চলতি বছর ১ একর আয়তনের ৮০টি পুকুরে আধানিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষ শুরু করেন। আলহাজ্ব ফসিয়ার রহমানের বড় ছেলে মাসফিয়ার রহমান সবুজ জানান, এটা আমার পিতার একটি স্বপ্নের প্রকল্প ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে প্রকল্পের প্রতিটি পুকুরে প্রতি স্কয়ার মিটারে ৮-৯টি হারে ভাইরাস মুক্ত (এসপিএফ) পোনা ঘনত্বে মজুদ করা হয়। প্রতিদিন চারবার করে উন্নত (সিপি) ফিড প্রয়োগ করা হয়। পুকুরগুলোতে জেনারেটরের মধ্যেমে পর্যাপ্ত সরবরাহ করা হয় অক্সিজেন। কোন প্রকার রোগ বালাই ছাড়াই ১২০ দিন থেকে ১৫০ দিনের মধ্যে বাজার জাত করার উপযোগী হয় উৎপাদিত চিংড়ি। ছোট ছেলে ইসতিয়ার রহমান শুভ জানান, আহরণ শেষে হেক্টর প্রতি চিংড়ির উৎপাদন হয় ৫ হাজার ৭শ কেজি। প্রতিটি মাছের দৈহিক ওজন হয় সর্বনি¤œ ১২০ এবং সর্বোচ্চ ১৬০ গ্রাম পর্যন্ত। প্রতি কেজি চিংড়ি বিক্রি করা হয়েছে দেড় হাজার টাকা দরে। শুভ জানান, প্রকল্পটি যেখানে রয়েছে সেখানে যাতায়াতের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত হওয়ায় উৎপাদন খরচ কিছুটা বেশি হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হলে এ পদ্ধতির চিংড়ি চাষে উৎপাদন খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি উন্নত পদ্ধতির চিংড়ি চাষে এগিয়ে আসত অনেকেই। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট লোনাপানি কেন্দ্রের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকতা ড. মোঃ লতিফুল ইসলাম জানান, চিংড়ি চাষের জন্য সব সময় অনুকূল পরিবেশ প্রয়োজন হয়। মান সম্মত পোনা মজুদ, নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও অতিরিক্ত প্রোটিন যুক্ত খাবার ব্যবহার করার ফলে এমন উৎপাদন সম্ভব হয়েছে বলে বৈজ্ঞানিক এ কর্মকর্তা জানান। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল জানান, এলাকায় চিংড়ি চাষের ইতিহাস দীর্ঘদিনের হলেও অতিতে কখনো চিংড়ি উৎপাদনের এমন রেকর্ড শোনা জায়নি। সাফওয়ান প্রকল্পের প্রতি কেজি চিংড়ির উৎপাদন খরচ হয়েছে ৪শ টাকা। আর উৎপাদিত চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি দেড় হাজার টাকা। অথচ সচারাচার বাজারে সাধারণ চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫শ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে। এ ছাড়াও সনাতন পদ্ধতির চিংড়ি চাষে রোগবালাই সহ নানা রকম ঝুঁকি থাকে। একদিকে যেমন উৎপাদন খরচ বেশি হয় অপর দিকে কম হয় উৎপাদন। এ ক্ষেত্রে হাজার হাজার বিঘা আয়োতনের চিংড়ি ঘের থেকে সরে এসে ছোট ছোট পুকুর করে উন্নত পদ্ধতির চিংড়ি চাষে এগিয়ে আসার জন্য সাধারণ চাষীদের প্রতি তিনি আহবান জানান। উপকূলীয় এলাকায় চিংড়ি চাষে সাফওয়ান প্রকল্প মডেল হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। সবুজ মৎস্য খামারের ম্যানেজার বিশ্বজিৎ সরকার জানান, চিংড়ি উৎপাদনের এমন খবর পেয়ে সম্প্রতি প্রকল্পটি পরিদর্শন করেন মৎস্য অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক রণজিৎ কুমার পাল, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শামিম হায়দার, উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডঃ স ম বাবর আলী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ-উল-মোস্তাক সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ।
পাইকগাছায় আধানিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষে রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন হয়েছে। চলতি বছর সদ্য প্রয়াত আলহাজ্ব ফসিয়ার রহমানের সাফওয়ান এ্যাকোয়া কালচার প্রকল্পে হেক্টর প্রতি বাগদা চিংড়ির উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ৭শ কেজি। উৎপাদিত প্রতিটি চিংড়ির দৈহিক ওজন হয়েছে সর্বনিম্ন ১২০ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ১৬০ গ্রাম পর্যন্ত। কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকা। যা সাধারণ চিংড়ির চেয়ে কেজি প্রতি ৫ থেকে ৭শ টাকা বেশী। চিংড়ি উৎপাদনের অতিতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করায় সাফওয়ান প্রকল্পের উৎপাদন দেখে আধানিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সনাতন পদ্ধতির চিংড়ি চাষীরা। সম্প্রতি প্রকল্পটি পরিদর্শন করে উপকূলীয় এলাকায় আধানিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষের অপার সম্ভবনা মনে করছেন মৎস্য বিভাগের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, উপকূলীয় পাইকগাছায় ৮০’র দশকে শুরু হয় লবণ পানির চিংড়ি চাষ। শুরুতেই চিংড়ি চাষ অধিক লাভজনক হলেও ৯০’দশকের পরবর্তী সময় থেকে চিংড়িতে ভাইরাস সহ বিভিন্ন রোগ বালাই দেখা দেয়ায় হুমকির মুখে পড়ে সম্ভবনাময় চিংড়ি শিল্প। বর্তমানে উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ হচ্ছে। ছোট-বড় মিলে চিংড়ি ঘেরের সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৪ সহস্রাধিক। কিন্তু অধিকাংশ ঘের মালিকরা সনাতন পদ্ধতিতে চাষ করায় বছরের পর বছর ধরে লাভের স্থলে লোকসান গুনতে হয় সংশ্লিষ্ট চাষীদের। চিংড়ি চাষের এ দূরাবস্থার মধ্যে চাষ পদ্ধতি পরিবর্তন করে আধানিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষে এগিয়ে আসেন সদ্য প্রয়াত জাতীয় স্বর্ণপদক প্রাপ্ত চিংড়ি চাষী আলহাজ্ব ফসিয়ার রহমান। তিনি ২০১৫ সালে উপজেলার হাড়িয়া মৌজায় ৪শ বিঘা জমির উপর সাফওয়ান এ্যাকোয়া কালচার নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেন। প্রথম বছর ১৬টি পুকুরে চিংড়ি চাষ করে অধিক লাভজনক হওয়ায় চলতি বছর ১ একর আয়তনের ৮০টি পুকুরে আধানিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষ শুরু করেন। আলহাজ্ব ফসিয়ার রহমানের বড় ছেলে মাসফিয়ার রহমান সবুজ জানান, এটা আমার পিতার একটি স্বপ্নের প্রকল্প ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে প্রকল্পের প্রতিটি পুকুরে প্রতি স্কয়ার মিটারে ৮-৯টি হারে ভাইরাস মুক্ত (এসপিএফ) পোনা ঘনত্বে মজুদ করা হয়। প্রতিদিন চারবার করে উন্নত (সিপি) ফিড প্রয়োগ করা হয়। পুকুরগুলোতে জেনারেটরের মধ্যেমে পর্যাপ্ত সরবরাহ করা হয় অক্সিজেন। কোন প্রকার রোগ বালাই ছাড়াই ১২০ দিন থেকে ১৫০ দিনের মধ্যে বাজার জাত করার উপযোগী হয় উৎপাদিত চিংড়ি। ছোট ছেলে ইসতিয়ার রহমান শুভ জানান, আহরণ শেষে হেক্টর প্রতি চিংড়ির উৎপাদন হয় ৫ হাজার ৭শ কেজি। প্রতিটি মাছের দৈহিক ওজন হয় সর্বনি¤œ ১২০ এবং সর্বোচ্চ ১৬০ গ্রাম পর্যন্ত। প্রতি কেজি চিংড়ি বিক্রি করা হয়েছে দেড় হাজার টাকা দরে। শুভ জানান, প্রকল্পটি যেখানে রয়েছে সেখানে যাতায়াতের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত হওয়ায় উৎপাদন খরচ কিছুটা বেশি হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হলে এ পদ্ধতির চিংড়ি চাষে উৎপাদন খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি উন্নত পদ্ধতির চিংড়ি চাষে এগিয়ে আসত অনেকেই। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট লোনাপানি কেন্দ্রের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকতা ড. মোঃ লতিফুল ইসলাম জানান, চিংড়ি চাষের জন্য সব সময় অনুকূল পরিবেশ প্রয়োজন হয়। মান সম্মত পোনা মজুদ, নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও অতিরিক্ত প্রোটিন যুক্ত খাবার ব্যবহার করার ফলে এমন উৎপাদন সম্ভব হয়েছে বলে বৈজ্ঞানিক এ কর্মকর্তা জানান। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল জানান, এলাকায় চিংড়ি চাষের ইতিহাস দীর্ঘদিনের হলেও অতিতে কখনো চিংড়ি উৎপাদনের এমন রেকর্ড শোনা জায়নি। সাফওয়ান প্রকল্পের প্রতি কেজি চিংড়ির উৎপাদন খরচ হয়েছে ৪শ টাকা। আর উৎপাদিত চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি দেড় হাজার টাকা। অথচ সচারাচার বাজারে সাধারণ চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫শ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে। এ ছাড়াও সনাতন পদ্ধতির চিংড়ি চাষে রোগবালাই সহ নানা রকম ঝুঁকি থাকে। একদিকে যেমন উৎপাদন খরচ বেশি হয় অপর দিকে কম হয় উৎপাদন। এ ক্ষেত্রে হাজার হাজার বিঘা আয়োতনের চিংড়ি ঘের থেকে সরে এসে ছোট ছোট পুকুর করে উন্নত পদ্ধতির চিংড়ি চাষে এগিয়ে আসার জন্য সাধারণ চাষীদের প্রতি তিনি আহবান জানান। উপকূলীয় এলাকায় চিংড়ি চাষে সাফওয়ান প্রকল্প মডেল হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। সবুজ মৎস্য খামারের ম্যানেজার বিশ্বজিৎ সরকার জানান, চিংড়ি উৎপাদনের এমন খবর পেয়ে সম্প্রতি প্রকল্পটি পরিদর্শন করেন মৎস্য অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক রণজিৎ কুমার পাল, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শামিম হায়দার, উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডঃ স ম বাবর আলী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ-উল-মোস্তাক সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন