
যৌন
হয়রানীর শিকার সংশ্লিষ্টদের পরিবারসহ সচেতন এলাকাবাসী কালী মন্দির
প্রতারনার আঁখড়াটি উচ্ছেদ পূর্বক ভন্ড কথিত তান্ত্রিক দম্পতিকে গ্রেফতার
করে শান্তির দাবি করেছে।
অভিযোগে জানাগেছে, উপজেলার পূর্ব কাশিমনগর
গ্রামের মৃত রঘুদেব নাথ মন্ডলের ছেলে শংকর মন্ডল (৪৫) কয়েক বছর পূর্বে
বাড়িতে ব্যক্তিগত একটি কালী মন্দির (থান) স্থাপন করেন এবং ঐ সময় তিনি
প্রচার করেন কালী না কি তার স্ত্রী বিনোতা রাণী মন্ডল (৪২) কে স্বপ্ন
দেখিয়েছেন ঐ মন্দির স্থাপন করে তার সাধনা করতে। এরপর ঐ মন্দির প্রতিষ্ঠা
করে স্ত্রী বিনোতা রাণী তন্ত্র সাধনা শুরু করেন। পাশাপাশি এলাকায় প্রচার
করেন তারা নাকি বার পেয়েছেন। সেখানে মানুষের বর্তমান, অতীত ও ভবিষ্যত বাণী
সহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করা হয়। সেই থেকে সপ্তাহের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার ঐ
আঁখড়ায় বসে বার বা কথিত চিকিৎসা কার্য।
সেখানে উপস্থিত বিভিন্ন
মহিলা রোগীদের নানা অপকৌশলে রাজী করায় যে, সমস্যা সমাধানে মাদুলী (তাবিজ)
করতে তার স্পর্ষকাতর অঙ্গের উপাদান লাগবে। রাজী থাকলে পাশের ঘরে গুরুদের
আছেন তিনি ব্যবস্থা করবেন। এরপর বিপদগ্রস্থ মহিলারা ঐ ঘরে গেলে বিভিন্ন
অপকৌশলে স্পর্ষকাতর অঙ্গের উপাদান নেয়ার কথা বলে যৌণ সঙ্গমে লিপ্ত হয় কথিত
গুরুদেব ও তান্ত্রিক মহিলার স্বামী শংকর মন্ডল। শুধু এখানেই শেষ নয়, যৌণ
সঙ্গমের ঐ চিত্র সে কৌশলে মোবাইলে ধারণ করে রাখে। যা দিয়ে পরবর্তীতে ফাঁদে
পা দেয়া সর্বহারা মহিলাদের সাথে অব্যাহত ব্লাক মেইল করে হাতিয়ে নেয় মোটা
অংকের নগদ অর্থ সহ স্বর্ণালংকার।
এলাকাবাসী জানায়, এমন অভিযোগ তারা
আগেও পেয়েছে। তবে উপযুক্ত প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোন
ব্যবস্থা নিতে পারেনি। সম্প্রতি অসাবধানতাবশত শংকরের মোবাইলটি হাত ছাড়া হলে
বেরিয়ে পড়ে বিভিন্ন সময়ে করা তার সকল কূ-কীর্তির খবর। অল্প সময়ের মধ্যেই
বিভিন্ন হাত বদল হয়ে ঐ সকল ভিডিও চিত্র ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন মোবাইলে। গত ২/৩
দিনে এ নিয়ে এলাকায় রীতিমত ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
অভিযোগের
প্রেক্ষিতে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য গতকাল সকালে ঐ এলাকায় গেলে শ’ শ’ উৎসুক
মানুষ জড়ো হয় সেখানে। খুলে বলে তাদের কূ-কীর্তির কথা। এমনকি ঐ সময়বিভিন্ন
মানুষ তাদের সংগ্রহে রাখা মোবাইলের ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করে। এরপর
অভিযুক্ত শংকরের বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী কথিত তান্ত্রিক সাধক বিনোতা রাণী
বলেন, বিষয়টি সত্য তবে তার স্বামী ভবিষ্যতে আর কোন অপকর্ম করবেনা বলে পা
জড়িয়ে ধরে কান্না-কাটি শুরু করে। তবে এসময় শংকর বাড়িতে ছিলনা।
এলাকাবাসী জানায়, আগের রাতে শংকর বিষয়টি বুঝতে পেরে বাড়ি ছেড়ে গাঁ-ঢাকা দিয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, আগের রাতে শংকর বিষয়টি বুঝতে পেরে বাড়ি ছেড়ে গাঁ-ঢাকা দিয়েছে।
এসময় কথা হয় স্থানীয় ইউপি সদস্যা শেফালী মন্ডলের সাথে। তিনি ঘটনার সত্যতা
স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন তবে তা স্থানীয় ভাবে মিমাংশার
চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় আরেক ইউপি সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলামও বিষয়টির
সত্যতা স্বীকার করে প্রাথমিক ভাবে বসাবসি করে মিমাংশার কথা বলেন। এসময়
স্থানীয় বাসিন্দা তরুণ মন্ডল, নিতাই,পবিত্র মন্ডল সহ এলাকাবাসী থান
(আঁখড়া)টি উচ্ছেদ পূর্বক সংশ্লিষ্ট দোষীদের শাস্তিরদাবি করেন।
এদিকে
নির্যাতনের শিকার অনেক গৃহবধূর পরিবার বিষয়টি অবগত হয়ে শংকরের শাস্তি
দাবির পাশপাশির তাকে পেটাতে তাদের বাড়িতে জড়ো হচ্ছেন। গতকাল সকালে এমনই
জনৈক ব্যক্তি শংকরের বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে না পেয়ে তার কথিত তান্ত্রিক
স্ত্রীকে বেধড়ক পিটিয়েছে।
এলাকাবাসী উক্ত আঁখড়াটি বন্ধ পূর্বক
সংশ্লিষ্ট দোষীদের গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের
প্রতি জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন