
পাইকগাছার শিবসা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ মাছ। নদী থেকে ধরা মাছ ব্যাপারীরা সরাসরি আড়তে নিয়ে যায়। সেখান থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছে স্থানীয় বাজারে। আর খুচরা বাজার থেকেই সাধারণ ক্রেতারা কি
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর যাবৎ তীব্র সংকটের কারণে ইলিশ ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। সামান্য কিছু পাওয়া গেলেও একদিকে খুচরা বাজার গুলোতে পাওয়া যেত না। অপরদিকে চড়া মূল্যের কারণে ইলিশের স্বাদ ভুলতে বসে ছিল নিু ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা। অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর হলেও স্থানীয় নদ-নদীতে দেখা মিলেছে ইলিশের। উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন গড়ইখালী, বেতবুনিয়া ও সোলাদানা সংলগ্ন শিবসা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ। মৎস্য আড়তদারী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল জব্বার জানান, এমন এক সময় ছিল ইলিশের চেহারা কেউ দেখতে পেতো না। সাম্প্রতিক সময়ে শিবসা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে, যা প্রতিদিন আড়তে নিয়ে আসা হয়। সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুুর রব জানান, নদীতে ধরা পড়া ইলিশ ব্যাপারীরা সরাসরি জেলেদের কাছ থেকে কিনে আড়তে নিয়ে আসে। এরপর আড়ত থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা স্থানীয় বাজার গুলোতে বিক্রি করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৭ মণ ইলিশ আড়তে আসে বলে সমিতির এ কর্মকর্তা জানান। পৌর মাছ বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান জানান, শিবসা নদীর মাছ টাটকা হওয়ায় স্থানীয় ভাবে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ৫শ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের ইলিশ ধরা পড়ছে। ছোট সাইজের ইলিশ ৭শ টাকা এবং বড় সাইজের ইলিশ সাড়ে ৭শ থেকে ৮শ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করা হয়। শিক্ষক প্রদীপ সরকার জানান, শিবসার ইলিশ বরফ ছাড়াই টাটকা পাওয়া যায়, এ জন্য টাটকা ইলিশের স্বাদ সাধারণ ইলিশের চেয়ে একটু আলাদা হয়। তবে ইলিশ ধরার পর কয়েকটি স্থানে হাত বদল না হলে খুচরা বাজার গুলোতে ইলিশের দাম আরেকটু কম হতো বলে তিনি জানান। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট লোনাপানি কেন্দ্রের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ লতিফুল ইসলাম জানান, ইলিশ সংরক্ষণে সরকার ও মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এর দীর্ঘদিনের কার্যকরী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের সুফল হিসাবে পদ্মা, মেঘনা সহ দেশের উপকূলীয় এলাকার সকল নদ-নদীতে বর্তমানে প্রচুর পরিমানে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, চলতি মৌসুমে উপর থেকে উজানের মিষ্টি পানির ব্যাপক প্রবাহের কারণে উপকূলীয় অভ্যন্তরীন নদ-নদী গুলোতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। ইলিশ সংরক্ষণে সবাই এগিয়ে আসলে ভবিষ্যতে ইলিশের আর সংকট থাকবে না বলে মন্তব্য করেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল। চাষাবাদ সহ ইলিশ সংরক্ষণে গবেষণা খাতকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিবেন এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন উপকূলীয় জনপদের মানুষ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন